রোজা, নামাজ, নিজের কাজের মূল্যায়ন এবং মানুষকে সাহায্য করার জন্য - পবিত্র রমজান মাসের চেয়ে উত্তম সময় সারা বছরে আর নেই।

অনুগ্রহ করে ইউনিসেফকে দান করুন - একটি নিঃস্ব, অসহায় শিশুকে জীবনরক্ষাকারী সহায়তা পৌছে দিতে আমাদের সাহায্য করুন।

"আমি দিনে শুধুমাত্র একবেলা খাবার খেতে পারি, এবং তার উপরে, আমার সন্তান অসুস্থ।"
- বলেন মোঃ কাওসার, মাহদীর পিতা

এই রমজান, আসুন আমরা একত্রে পালন করি।

মাহদির জন্মের কয়েক মাস পরে, তাদের গ্রাম মারাত্মক মৌসুমী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এটি তার পরিবারের বেশিরভাগ জিনিসপত্রের ক্ষতি করে। তার পরিবার তাদের জলাবদ্ধ বাড়িতে আটকে পড়েছিল। তাদের খাদ্য ও নিরাপদ পানীয় জলের সীমিত সরবরাহ ছিল। বন্যা তাদের জীবন ও জীবিকার নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল। ফলস্বরূপ, বন্যার পরে, মাহদির জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল কারণ শিশুটি গুরুতর অপুষ্টিতে ভুগছিল। ইউনিসেফ-সমর্থিত কমিউনিটি স্বাস্থ্য নিরীক্ষ্যা ও স্বাস্থ্য কর্মীদের সময়মত হস্তক্ষেপে মাহদিকে তাহিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মারাত্মক অপুষ্টি (স্যাম)চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। তাকে সুস্থ করার জন্য জীবনরক্ষাকারী থেরাপিউটিক দুধ খাওয়ানো হয় । সারা দেশে, থেরাপিউটিক দুধের এই সরবরাহ ইউনিসেফ বাংলাদেশ সরকারকে প্রদান করে। আজ মাহদি মারাত্মক অপুষ্টি থেকে সেরে উঠেছেন; তার এখন আবার হাসি, খেলা এবং আরও ভালো, সুস্থ জীবন যাপন করার শক্তি আছে।

কিন্তু বাংলাদেশের অনেক শিশুদের এখনও আমাদের সাহায্য প্রয়োজন। মাহদির বাবা-মায়ের মতো অনেক নিঃস্ব,অসহায় অভিভাবক, যারা দৈনিক মজুরির উপর নির্ভরশীল, তাদের জন্য প্রতিটি দিনই একটি সংগ্রাম। বন্যার মতো দুর্যোগ যখন আঘাত হানে, তখন তারা উল্লেখযোগ্যভাবে আরও কঠিন লড়াই করেন। তাদের শিশুদের জন্য মৌলিক খাদ্য, পানি এবং চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য, জরুরি সহায়তা প্রয়োজন।

আপনার উদার অনুদান ইউনিসেফকে বাংলাদেশের শিশুদের অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে; সহায়তা করে, আট-মাস বয়সী মাহদির মতো অপুষ্টিতে আক্রান্তদের, জীবনরক্ষাকারী থেরাপিউটিক দুধ সরবরাহ করতে।

একসাথে, আপনি, আমরা একটি ইতিবাচক প্রভাব আনতে পারি, আমরা নিশ্চিত করতে পারি যে বাংলাদেশের প্রতিটি শিশু তাদের পূর্ণ সম্ভাবনায় উন্নতি করার সুযোগ পাবে।

বাংলাদেশে আমরা যে পরিবর্তন এনেছিঃ

২০২২ সালে, আমাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা-

 

child stat 1

 

২-বছরের কম বয়সী, ৭৬৬, ৮১৯জন শিশুদের কাছে খর্বাকৃতি (নবজাতক ও শিশুর খাদ্য বিষয়ক কাউন্সেলিং); এবং অন্যান্য ধরণের অপুষ্টি প্রতিরোধ এর জন্য সেবা পৌছাতে সহায়তা প্রদান করেছি।

women stats 1

 

৩,২৯৩,৫৯৪জন নারীকে মানসম্পন্ন পুষ্টিসেবা এবং সহায়তা প্রদান করেছি।

water stats-3

 

২, ৪৪০,০০০ অতিরিক্ত ব্যাক্তিদের নিরাপদ পানীয় সরবরাহ পরিষেবা পেতে সহায়তা করেছি।

আপনার অনুদান ইউনিসেফকে কীভাবে সাহায্য করবে...

রমজান মাস হল দান করার উত্তম সময়। অভাবগ্রস্ত শিশুদের সাহায্যের চেয়ে দান করার উত্তম উপায় আর কি হতে পারে?

অসহায়, দুস্থ শিশু এবং তাদের পরিবারের জন্য জীবনরক্ষাকারী সহায়তা প্রদানের জন্য ইউনিসেফ এবং অংশীদাররা অক্লান্ত পরিশ্রম করছে। সম্মিলিতভাবে এই রমজানে আমরা একটি দীর্ঘস্থায়ী ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারি এবং সকল অসহায় শিশুদের জন্য একটি মঙ্গলময় এবং নতুন জীবনের আশা নিয়ে আসতে পারি।

অনুগ্রহ করে আজই অনুদান করুন - বাংলাদেশের অসহায় মানুষের কাছে জীবনরক্ষাকারী সামগ্রী পৌছে দিতেতে, ইউনিসেফকে সহায়তা করুন।

  • আপনার অনুদানের মাধ্যমে, ইউনিসেফ শিশু স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, টিকাদান, নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন, মানসম্পন্ন শিক্ষা এবং দক্ষতা বৃদ্ধি, এইচআইভি প্রতিরোধ, মা ও শিশুদের চিকিৎসা এবং সহিংসতা ও শোষণ থেকে শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের সুরক্ষার মতো কার্যক্রম চলমান রাখতে সহায়তা করবে।
  • আপনার অনুদানের মাধ্যমে, ইউনিসেফ আরও বেশি শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের মানসম্পন্ন শিক্ষার সুযোগ তৈরিতে সহায়তাকরবে যা তাদের প্রয়োজনীয় জ্ঞান এবং দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ভবিষৎতের জন্য প্রস্তুত করবে।
  • আপনার অনুদান দিয়ে ইউনিসেফ ক্ষতিগ্রস্ত কমিউনিটিতে দীর্ঘমেয়াদী প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরিতে সহায়তা করবে যাতে কমিউনিটির সদস্যরা জীবন-জীবিকা পুনরুদ্ধার করতে পারে এবং ভবিষ্যৎ্ দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত হতে পারে। আমরা বর্তমান জলবায়ু সংকটের ক্ষতিকর প্রভাব প্রশমিত করতেও তাদের সাহায্য করতে পারি।

সচরাচর জিজ্ঞাস্য

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যেসব শিশুর জীবন ও ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে ছিল, তাদের সাহায্য করতে প্রতিষ্ঠিত হয় ইউনিসেফ। এক্ষেত্রে ওই শিশুরা কোন দেশের নাগরিক সেটি বিবেচ্য ছিল না। ইউনিসেফের কাছে একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল অসহায়ী শিশুদের কাছে পৌঁছানো। একই কথা আজও সত্য। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা এবং সবচেয়ে অসহায় শিশু ও তরুণদের কাছে পৌঁছাতে আমরা দিন-রাত বিশ্বের সবচেয়ে দুর্গম অঞ্চলে কাজ করি। আমরা তাদের জীবন বাঁচাতে এবং তাদের অধিকার রক্ষায় কাজ করি। আমরা কাজ করি আঘাত থেকে তাদের নিরাপদ রাখতে। আমরা তাদের এমন একটি শৈশব দিতে চাই, যেখানে তারা সুরক্ষিত ও সুস্থ থাকবে, শিক্ষিত হবে। আমাদের লক্ষ্য, তাদের মধ্যে থাকা সম্ভাবনার পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটানোর জন্য একটি ন্যায্য সুযোগ করে দেওয়া। আমরা ইউনিসেফ। আমরা সর্বত্র, সকল শিশুর পাশে দাঁড়াই। আর আমরা কখনও হাল ছেড়ে দেই না।

ইউনিসেফের তহবিল গঠিত হয় সম্পূর্ণভাবে সরকার, আন্তঃসরকারি সংস্থা, বেসরকারি খাত, ফাউন্ডেশন ও ব্যক্তির ঐচ্ছিক অনুদানের মাধ্যমে। দাতাদের কল্যাণে ইউনিসেফ দরিদ্র শিশুদের জীবনে ইতিবাচক পার্থক্য তৈরি করে। আমরা ১৯০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে কাজ করছি এবং অন্য যেকোনো মানবিক সংস্থার চেয়ে বেশি সংখ্যক শিশুর জীবন বাঁচাতে সাহায্য করেছি। দাতাদের সমর্থন ও উদারতা ছাড়া আমরা আমাদের এই প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে পারতাম না। আমরা আশা করি আপনি ইউনিসেফ পরিবারে যোগদানের বিষয়টি বিবেচনা করবেন।

ইউনিসেফ একমাত্র জাতিসংঘ সংস্থা যা ঐচ্ছিক অনুদানের উপর নির্ভর করে। ইউনিসেফ দাতাসংস্থা, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, ফাউন্ডেশন এবং ব্যক্তিগত ঐচ্ছিক অনুদানের উপর নির্ভর করে। বাংলাদেশে যে তহবিল সংগ্রহীত হয় তা শুধুমাত্র বাংলাদেশে ইউনিসেফের কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়। ইউনিসেফের কার্যক্রম টেকসই করার জন্য জরুরিভাবে তহবিলের প্রয়োজন। বর্ধনশীল অর্থনীতি এবং বিদেশী অনুদানের মন্থর পরিস্থিতিতে, আগামী দিনে দেশের প্রতিটি শিশুর উন্নতির ন্যায্য সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য, ইউনিসেফ বাংলাদেশ আপনার সহায়তা চায়।

হ্যাঁ। বাংলাদেশ থেকে সংগ্রহ করা সমস্ত অর্থ বাংলাদেশেই থাকে এবং বাংলাদেশে শিশুদের জন্য ইউনিসেফের কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তা করে।

ইউনিসেফ, তহবিলের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে নিয়মিত এবং কঠোরভাবে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক নিরীক্ষা করে থাকে। স্বচ্ছতার জন্য বার্ষিক প্রতিবেদন সবার জন্য উন্মুক্ত। ইউনিসেফের কর্মীরা নিয়মিত মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন ও কর্মসূচির অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করেন।

ইউনিসেফ ৭০ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা এবং শিশুদেরজন্য কাজ করছে। আপনার সাদাকাহ ইউনিসেফকে দেয়ার মাধ্যমে আপনি বাংলাদেশের সবচেয়ে অসহায় শিশুদের জন্য জীবনে আশা ও স্বস্তি আনতে সাহায্যকরতে পারেন।

জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর মধ্যে ফিল্ড অফিস পরিচালনায় ইউনিসেফ অনন্য। সংস্থার কর্মীরা ফিল্ড অফিসগুলো পরিচালনা করেন এবং তারা দেশজুড়ে একটি বিস্তৃত নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন। বাংলাদেশের আট প্রশাসনিক বিভাগেই আমাদের কার্যালয় রয়েছে। বিভাগগুলো ৬৪ জেলায় বিভক্ত। প্রধান প্রধান শহরের অনুসারে বিভাগগুলোর নাম, যেখানে প্রশাসনিক দপ্তরগুলো অবস্থিত। শতাধিক ফিল্ড কর্মকর্তা-কর্মচারী স্থানীয় সরকার পর্যায়ে সহযোগীদের সঙ্গে মিলে আমাদের কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও তদারকিতে কাজ করছেন।